Wednesday, May 1, 2019

বিদঘুটে বিষণ্ণতা


     হিসেব মতো আজকের দিনটা তাদের কাটানো উচিত ছিল অফিসের ব্যালকনিতে একসাথে কোনো রকম ঝগড়া ছাড়াই, ঠিক আগের মতো ওই শুরুর দিন গুলোর মতো।একসাথে দাঁড়িয়ে অফিসের নিজেদের প্রজেক্ট বা পার্সোনাল লাইফ নিয়ে কথাবার্তা করে, কিন্তু হলো না; হঠাৎ করেই আবার শুরু হলো দুজনের মধ্যে চরম কথাকাটি, কোনো ভিত্তি নেই,কোনো রকম কারণ নেই, কিন্তু তাদের মধ্যে ঝগড়াটা বর্তমান| চললো বেশ কিছুক্ষন, হঠাৎ করেই আবার শান্ত দুজনে, একে-অপরের দিকে হাত নাড়িয়ে আবার ফিরলো নিজেদের কাজের ব্যস্ততাই|

          বেশ ভালোই ব্যাপারটা তাই না ?

  
মাঝে মাঝে ফুলের জায়গায় ফুলদানি ছোড়াছুড়ি করা, কখনও  আবার অকাল বর্ষা নামানোর জন্য চোখের নিচে স্রোতের জন্য গতিধারাকে বজায় রাখতে গিয়ে ভেতর থেকে বৃষ্টি নামানো, কোনো ক্ষেত্রেই কিন্তু মাটি ভেজে না,কিন্তু কাদা মাখা হয়ে যায় যেকোনো সম্পর্কের জটিল সমীকরণ| শুধু কিছু মুহূর্ত গেঁথে রাখার জন্য নির্বোধের মতো দুজনের মধ্যে সোজা-সাপটা আবেগ গুলোকে বের করার তাগিদে এতো কিছু| সত্যিই নির্বোধ, না হলে কেও কখনো ঝগড়া খোঁজার চক্করে শহরের অলি-গলি থেকে শুরু করে কাঁচের বাঁধানো ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে রাগ করে? কে জানে হয় তো করে কেও, কেও হয়তো রাগের মধ্যে নিজেদের সম্পর্কের ভাঙ্গনের কারণগুলোকে স্পষ্ট করে দেখার অনুভূতি নিয়েই ঝগড়া করে, কখনও  ভাবে সমাধান মিলবে পরে, কখন আবার ভাবে সবশেষ। 

 আমার জন্য এক চিমটে অবশেষ পড়ে রইলো আমার টেবিলের চায়ের কাপে| আমি ছিলাম নীরব দর্শক, নখের ডোগা কামড়ানোর অবকাশে।


আজকের এই ঝগড়া বা অভিমানের প্রেম, কোনো কিছুই কিন্তু অযৌতিক নয় আমার কাছে, এখানে তো শুধু কিছু মেলবন্ধনের অভাবে দুজনের গোলাপের পাপড়িতে দেখি ঘুন ধরতে শুরু করেছে| কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখি, টবের গোড়াতেই  শেকড়ের নামে কিছু ব্যাকটেরিয়া নিজেদের বাসা বেঁধে বসে আছে শুরুর থেকেই, দুজনের অগোচরেই, বেশ ভালো ভাবেই নিজেদের ছড়িয়েছে গোলাপের মুখের ধার ঘেঁষে ঘেঁষে| মিথ্যের নাম দিয়েই তারা পাপড়ির রং মেলেছিল, যা দেখে অভিভূত হয়েছিল হয়তো ওরা দুজন| ছায়া ঘেঁসাঘেসি দুরুত্বতা তাই হয়তো আজকে জায়গা নিয়েছে মাঝখানের কতকগুলো টেবিলের ওপর রাখা নুনদানি আর সসের বোতল, খাবার থালায় আজ একটা চামচের সাথে একটাই কোল্ডড্রিঙ্কের স্ট্র আসে,এখনও  কিন্তু রোদের ঝলকে নিজেদের দেখার আবেগটা  ব্যালকনিতে থাকে, ওটাই শুধু ভালো লাগা বলতে পারি ওদের মধ্যে|


আমি কিন্তু কেও না, কারোর সম্পর্কের ব্যাপারে এখানে বক্তব্য রাখার, কিন্তু আমি আবার অনেক কিছুই, কারণ লেখার আড়ালে অনেক সম্পর্কের ভাঙ্গন রোখার  জন্য একটা বালির বাঁধ হলেও তো দেওয়ার চেষ্টা করতেই পারি| আমি জানি অনেক কিছুই সংক্ষেপেই রেখে দেওয়া যায় কথার ভাঁজের মধ্যে, কিন্তু ওই যে বললাম গোলাপ দেওয়ার সময় কিন্তু পাপড়িতে রং-টা  যেন ফ্যাকাসে না হয়ে যায় অন্যের চোখে| কিছু করার আগেই নিজের কথা না শোনাটা সত্যিই একটা বোকামি, না হলে  কেও কোনো দিন সাত বছরের ওঠাবসাকে এক মুহূর্তে এভাবে পাশের ধুলোতে মিশিয়ে দিতে পারতো? আমার তো মনে হয় না, আর কেও পারলে সেটার জন্য দায়ী নিজের বোকামির সাথে সাথে নিজেকে প্রাধান্য না দিয়ে অন্যের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়া|


শুধু প্রেমের রং না হয় তুমি মাখলে, কিন্তু একবার তো ভেবে দেখো যে শরীরে তুমি ওই রং মাখাতে চাইছো সে আদৌ তোমার সাথে হোলিতে মত্ত হতে চাই কি ?
যদি উত্তরটা আসে না তাহলে জানবে তোমার হোলিতে কখনই লাল আবির ছিল না, তুমি বাঁদুরে রঙের শিশিকে আদুরে রঙের সাথে মিশিয়ে ফেলেছিলে|

No comments:

Post a Comment